বিশ্বভারতী এবং ছাতিমতলা একে অপরের সঙ্গে সেই শুরুর দিন থেকে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। যদি বলা হয় ছাতিমতলা হচ্ছে বিশ্বভারতীর আধ্যাত্বিক উপাসনার সর্বপ্রাচীন সর্বপ্রধান কেন্দ্রস্থল তাহলে অত্যুক্তি করা হবে না। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের উপাসনার মাধ্যমে ছাতিমতলা সুচি সুন্দর রূপ পেয়েছিল। পৌষমেলার প্রারম্ভে আশ্রমিকরা এখানে সম্মিলিত হন। পৌষ মেলার সময় বিশ্বভারতীর স্নাতকদের হাতে স্মারক হিসেবে সপ্তপর্ণী (ছাতিম পাতা) তুলে দেওয়া এখানকার প্রথা।
তিনি
আমার প্রানের আরাম
মনের আনন্দ
আত্মার শান্তি।
এই পরিবারের শ্রীকণ্ঠ সিংহ মহর্ষির একজন প্রিয় শিষ্য ছিলেন। বোলপুর থেকে রায়পুর যাবার পাকা সড়ক তখনও ছিল। সেই সড়ক ধরে রায়পুর গেলে শান্তিনিকেতনের মাঠ পড়িবার কথা নয়। হতে পারে, কোন একবার পশ্চিম থেকে ফেরার সময় তিনি আহমদপুর নেমে রায়পুর যাচ্ছিলেন। সেই যাবার সময়ে বর্তমানে শান্তিনিকেতনের মাঠের অনন্ত এবং জনশূন্য প্রান্তরে মহর্ষির নজর আটকে যায়। এই মাঠেই ছিল দুটি ছাতিম গাছ যেখানে তিনি খানিক বিশ্রাম নেন। গাছ দুটি সম্ভবত ওখানকার প্রাচীনতম আদিবাসী। এই জায়গাটি তখন রায়পুরের প্রধান ভূবন সিংহের নাম অনুসারে ভূবন মোহনের ডাঙ্গা বা ভুবনডাঙ্গা নামে পরিচিত ছিল। তিনি এই রায়পুরের বাবুদের কাছ থেকে বাংলার ১৬২৯ সালের ১৮ই ফাল্গুন (ইংরেজি ১৮৬৩ ৩রা মার্চ) ছাতিমতলা সমেত কুড়ি বিঘা জায়গা কোম্পানি নির্দিষ্ট বার্ষিক পাঁচ টাকা খাজনা মৌরসি পাট্টা পেলেন। উদ্দেশ্য একটাই নির্জন প্রান্তরে নিরাকার ব্রহ্মের উপাসনা করা। ছাতিমতলা সংলগ্ন এই কুড়ি বিঘা জমি আশ্রম এলাকা নামে পরিচিত।